সোমবার, ৩ জুলাই, ২০১৭

বাংলাভাষা পরিকল্পনা

বাংলাভাষা পরিকল্পনা

অহনলিপি-বাংলা১৪  ফন্ট AhanLipi-Bangla14 font  
ডাউনলোড করে নিজেকে আধুনিক করে তুলুন৤  

অহনলিপি-বাংলা১৪ ফন্ট হল-- 
(১)সেকেন্ড জেনারেশন ফন্ট
(২)স্মার্ট ফন্ট
(৩)বর্ণসমবায় ফন্ট
(৪)আলটিমেন্ট ফন্ট
এবং
(৫)বাংলা ফন্ট টেকনোলজির ফলিত প্রয়োগ৤








লেখাটি অহনলিপি-বাংলা১৪(AhanLipi-Bangla14) ফন্টে পড়তে হবে, নচেৎ লেখাটি দুষ্পাঠ্য হবে৤  

ফন্ট প্যাকেজ ডাউনলোড লিংক:






সঙ্গে দেওয়া ফাইল দেখে নিতে হবে৤

অহনলিপি-বাংলা১৪ ডিফল্ট টেক্সট ফন্ট সেটিং
(AhanLipi-Bangla14 Default text font setting)
Default text font setting ডিফল্ট টেক্সট ফন্ট সেটিং

এবং


অহনলিপি-বাংলা১৪ ডিফল্ট ইন্টারনেট সেটিং
(AhanLipi-Bangla14 Default Internet setting)

(Default font setting ডিফল্ট ফন্ট সেটিং)

on internet(Mozilla Firefox)
(top left) Tools  
              Options--contents
              Fonts and Colors
              Default font:=AhanLipi-Bangla14
                        Advanced...
                                    Fonts for: =Bengali
                                    Proportional = Sans Serif,   Size=20
                                    Serif=AhanLipi-Bangla14
                                    Sans Serif=AhanLipi-Bangla14
                                    Monospace=AhanLipi-Bangla14,  Size=20
                                    -- OK
            Languages
            Choose your preferred Language for displaying pages
            Choose
            Languages in order of preference
            Bengali[bn]
            -- OK
 -- OK

          এবারে ইন্টারনেট খুললে ‘অহনলিপি-বাংলা১৪’ ফন্টে সকলকিছু দেখা যাবে৤ নেটে এই ফন্টে সব কিছু লেখাও যাবে৤




বাংলাভাষা পরিকল্পনা 





সাহিত্য ও সংস্কৃতি 
জানু-মার্চ ১৯৯০ 

লেখকনাম মনোজকুমার দ. গিরিশ হিসেবে প্রকাশিত নয়৤




       বাংলা ছাপাখানা তখন নতুন পদ্ধতিতে অভ্যস্ত নয় বলে তা সঠিকভাবে কম্পোজ হয়নি৤ তবে খানিকটা বোঝা যাবে বাংলাভাষা পরিকল্পনার গতি প্রকৃতি৤ 



এটি যখন সাহিত্য ও সংস্কৃতি পত্রিকায় প্রকাশিত হয় তখনও কম্পিউটার তেমনভাবে আসেনি ইউনিকোড ফন্ট অজানা, দ্বিতীয় প্রজন্মের ইউনিকোড ফন্ট ব্যাপারটি আরও অজানা৤ তাই তা যেভাবে কম্পোজ করা দরকার ছিল তা হয়নি৤ তাছাড়া কম্পোজিং-এ কিছু প্রমাদও ছিল৤ প্রকাশিত লেখাটি নতুন করে কম্পোজ করা হল ইউনিকোড-দ্বিতীয় প্রজন্মের ফন্টে৤ সঙ্গে সাহিত্য ও সংস্কৃতির মূল লেখাটিও দেওয়া হল৤ 


এই রচনাটির অনেক ধারনাই পরে সংশোধন, পরিমার্জন করা হয়েছে৤ এজন্য দেখা যেতে পারে লিংক:
বাংলা ফন্ট-- প্রজন্ম পরম্পরা  http://amiya-bangla.blogspot.in/2017/07/blog-post_9.html

প্রকাশিত
সাহিত্য ও সংস্কৃতি--জানুয়ারি-মার্চ-১৯৯০ বর্ষ ২৫ সংখ্যা-৪,
পৃঃ-৪২৮-৪৩৮
মাঘ-চৈত্র ১৩৯৬

বাংলাভাষা পরিকল্পনা
মনোজকুমার মিত্র

          কথায় বলে সোনার পাথরবাটি৤ বাঙালিরা তাই৤ তারা রক্ষণশীল প্রগতিবাদী৤ গবেষণাটা হয়েছে বাংলা ভাষার জন্য, এবং সেটা সুফল-দায়ক বলে লক্ষ্য করা যাচ্ছে৤ কিন্তু বাংলাভাষায় প্রয়োগে সেটা কবে গ্রহণ করা যাবে বোঝা যাচ্ছে না৤
          এই পদ্ধতিটি সমগ্র ভারতীয় লিপির পক্ষে প্রযোজ্য, কারণ ভারতে লিপিমালার মূল ধারাটি এসেছে ব্রাহ্মীলিপি থেকে৤ লেখার এই পদ্ধতির মূল উদ্দেশ্য স্বচ্ছতা৤ সংবাদপত্রের কিংবা বইয়ের লেখাটি যাতে অল্প লেখাপড়া জানা লোকেরাও সহজে পড়তে এবং যাতে সহজে বুঝতে বা লিখতে পারেন সেদিকে এই পদ্ধতির মূল লক্ষ্য৤
          যুক্তবর্ণ হচ্ছে বর্ণকে যুক্ত করা৤ দুটো বা তিনটে হরফ জুড়ে যাতে সহজে কলম ঘুরিয়ে এবং কলম না তুলে হাতে করে লেখা যায়৤ পুরানো দিনে লেখাপড়ার চল ছিল কম, যারা লিখত পড়ত তারা গুরুর কাছে দীর্ঘকাল থেকে বা গিয়ে অভ্যাস করত৤ সে দিন গেছে৤ এখন লেখাপড়ার চলন ব্যাপক এবং সারা দেশ জুড়ে৤ আজকে তাই লেখার পদ্ধতিগত পরিবর্তন বা সরলীকরণ এবং যান্ত্রিকীকরণ দরকার৤ টাইপরাইটার, টেলেক্স, পিটিএস, কম্পিউটার ইত্যাদি ব্যবহারের সুবিধা থাকা দরকার৤ কম্পিউটার চেষ্টা করলে হাতের প্যাঁচের মতো পেঁচিয়ে লিখতেও-বা পারে, কিন্তু অন্য যন্ত্রগুলো তা পরবে না কোন মতেই৤ ছাপাটা যান্ত্রিক ব্যবস্থা৤ ছাপার বিস্তার থেকেই লেখাপড়ার বিস্তার হয়েছে, এ কথাটা মনে রাখা দরকার৤
          বাংলাভাষায় স্বচ্ছ এই যুক্তবর্ণ পদ্ধতি ব্যবহার করতে দেরি করলেও ভারতের অন্যান্য ভাষার লোকেরা এটি হাতে পেলে অনেক তাড়াতাড়ি এটি গ্রহণ করবেন৤ যাঁরা এটি আগে এবং ব্যাপকভাবে গ্রহণ করবেন তাঁরা ততো দ্রুত এগোবেন৤
          পদ্ধিতিটি এই --
          (১)  


          (২) 

                   এখানে c1=2/3c2  এবং c=ব্যঞ্জনবর্ণ Consonant.

          উদাহরণ--
(১) অঙ্ক, দ্বার, পীতাম্বর 
          (২) উজ্জ্বল, অস্ত্র, স্প্রিং স্প্লীট, স্ত্রী


          পুরো পদ্ধতিটা যে একবারে গ্রহণ করা যাবে এমন নাও হতে পারে, তাই সংস্কার কাজের আরম্ভ থেকে বাংলাভাষার পরিপূর্ণ সংস্কার অবধি কাজটি কয়েকটি ধাপে(Phase) ভাগ করে নেওয়া যেতে পারে৤
          বাংলা ছাপার সংস্কার কাজে ধাপ হবে তিনটি এবং ভাষা সংস্কার কাজের ধাপ হবে একটি[পরে এই ধারণার পরিবর্তন হয়েছে৤ একাধিক ধাপে বানান সংস্কার করতে হবে৤ এই ব্লগেই এ সম্পর্কিত লিংকটি দেখা যাবে৤ http://banglamoy.blogspot.in/2017/07/blog-post_3.html ], (জুলাই ২০১৭)৤ তবে সংস্কার কাজের এই ধাপে বিভিন্ন স্তর(Step) থাকতে পারে৤
                   বাংলা ছাপা পদ্ধতি :--
প্রথম ধাপ

ক্ক ক্ট ক্ত ক্ন ক্ম ক্ল ক্ব ক্স =৮
খ্ম =১
গ্দ গ্ধ গ্ন গ্ম গ্ল গ্ব =৬
ঘ্ন ঘ্ব =২
ঙ্ক ঙ্খ ঙ্গ ঙ্ঘ ঙ্ম =৫
চ্চ চ্ছ চ্ঞ =৩
জ্জ জ্ঝ জ্ব =৩
ঞ্চ ঞ্ছ ঞ্জ ঞ্ঝ =৪
ট্ট ট্ম ট্ব =৩
ড্ড ড্ম ড্ব =৩
ণ্ট ণ্ঠ ণ্ড ণ্ঢ ণ্ণ ণ্ম ণ্ব =৭
ত্ত ত্থ ত্ন ত্ম ত্ব =৫
থ্ব =১
দ্গ দ্ঘ দ্দ দ্ধ দ্ভ দ্ম দ্ব =৭
ধ্ন ধ্ম ধ্ব =৩
ন্ট ন্ড ন্ত ন্থ ন্দ ন্ধ ন্ন ন্ম ন্ব ন্স =১০
প্ট প্ত প্ন প্প প্ল প্স =৬
ফ্ল =১
ব্জ ব্দ ব্ধ ব্ব ব্ল =৫
ভ্ল =১
ম্ন ম্প ম্ফ ম্ব ম্ভ ম্ম ম্ল =৭
ল্ক ল্গ ল্ট ল্ড ল্প ল্ফ ল্ম ল্ল ল্ব =৯
শ্চ শ্ছ শ্ন শ্ম শ্ল শ্ব =৬
ষ্ক ষ্ট ষ্ঠ ষ্প ষ্ফ ষ্ব =৬
স্ক স্খ স্ট স্ত স্থ স্ন স্প স্ফ স্ম স্ল স্ব =১১
হ্ণ=হ্ণ(হ+ণ)  হ্ন=হ্ন(হ+ন) হ্ম হ্ল হ্ব =৫
ড়্গ =১
মোট=১৩০
                   এর মধ্যে পূর্ব বর্ণ বা c1 হল=
ক খ গ ঘ ঙ
 . জ . ঞ
ট . ড . ণ
ত থ দ ধ ন
প ফ ব ভ ম
.  .   .
শ ষ স হ (২৬টি),
অর্থাৎ ২৬টি পূর্ববর্ণ বা c1 তথা ছোটো হরফ রাখলে ১৩০টি যুক্তবর্ণ তৈরি করা যাবে৤


দ্বিতীয় ধাপ

ক্য ক্র খ্য খ্র গ্য গ্র ঘ্য ঘ্র
চ্য ছ্য জ্ঞ(জ্‍ঞ) জ্য জ্র ঞ্য
ট্য ট্র ঠ্য ড্য ড্র ঢ্য ঢ্র
প্য ত্য ত্র থ্য থ্র দ্য দ্র ধ্য ধ্র ন্য
প্য প্র ফ্র ব্য ব্র ভ্য ভ্র ম্য ম্র
য্য র্ক(৒ক) র্খ(৒খ) র্গ র্ঘ র্চ র্ছ র্জ র্ঝ র্ট র্ড র্ণ র্ত র্থ র্দ র্ধ র্ন র্প র্ফ র্ভ র্ম র্য র্ল র্ব র্শ র্ষ র্স র্হ র্ত্‌(র্ৎ) ল্য
শ্য শ্র ষ্ণ(ষ৏ ) য্য স্য স্র হ্য হ্র
মোট=৭৯

ক্ট্র ক্ত্য ক্ত্র ক্ন্য ক্ল্য ক্ষ্ণ(ক্ষ্ণ) ক্ষ্ম ক্ষ্য ক্ষ্ব
গ্ধ্য গ্ন্য গ্র্য
ঘ্ন্য
ঙ্ক্য ঙ্ক্র ঙ্ক্ষ ঙ্খ্য ঙ্গ্য ঙ্ঘ্য ঙ্ঘ্র
চ্ছ্র চ্ছ্ব
জ্জ্ব
ণ্ঠ্য ণ্ড্য ণ্ড্র
ত্ত্য ত্র্য ত্ত্ব ত্ন্য ত্ম্য ত্র্য
দ্দ্য দ্দ্ব দ্ধ্য দ্ধ্র দ্ধ্ব দ্ভ্র দ্র্য দ্ব্য
ন্ট্র ন্ড্র ন্ত্য ন্ত্র ন্ত্ব ন্দ্য ন্দ্র ন্দ্ব ন্ধ্য ন্ধ্র ন্ন্য
প্ত্র
ব্ধ্য ব্ধ্র ব্ভ্র ব্ল্য
ম্প্য ম্প্র ম্ব্র ম্ভ্র
র্ক্ক(র্ক্ক) র্ক্ত র্ক্য র্গ্য র্গ্র র্ঘ্য র্ঙ্গ(র্ঙ্গ) র্চ্চ র্চ্ছ র্চ্য র্জ্জ র্জ্ঞ র্জ্য র্ট্র র্ট্য র্ণ্য র্ত্ত র্ত্ম র্ত্য র্ত্র(র্ত্র) র্থ্য র্দ্দ র্দ্ধ র্দ্য র্দ্র র্দ্ব(র্দ্ব) র্ধ্য র্ধ্ব র্প্য র্ব্ব র্ব্ভ(র্ব্ভ) র্ভ্য র্ম্ম র্ম্য র্য্য র্ল্ল র্ব্য র্শ্য র্শ্ব র্ষ্ট র্ষ্ণ(র্ষ্ণ) র্ষ্য র্স্ট র্স্য
ল্ক্য ল্প্য
শ্চ্য
ষ্ক্র ষ্ক্ব(ষ্ক্ব) ষ্ট্য ষ্ট্র ষ্ঠ্য ষ্ণ্য(ষ্ণ্য) ষ্প্র ষ্ম্য
স্ক্র স্ট্র স্ত্য স্ত্র স্ত্ব স্থ্য(স্থ্য) স্ন্য স্প্র স্প্ল
হ্ম্য(হ্ম্য)
= ১২৫টি৤

          ক্ষ্ণ্য ক্ষ্ম্য ঙ্ক্ষ্য ন্ত্র্য র্চ্চ্য র্জ্জ্য র্ত্ত্য(র্ত্ত্য) র্ত্ত্র(র্ত্ত্র) র্দ্দ্য র্দ্ধ্ব(র্দ্ধ্ব) র্ব্ব্য র্ব্ভ্য(র্ব্ভ্য) র্ষ্ণ্য(র্ষ্ণ্য) র্স্ম্য(র্স্ম্য)   

=১৪টি 
এখানে মোট যুক্তবর্ণ ৭৯+১২৫+১৪=২১৮টি 
এর মধ্যে পূর্ববর্ণ বা c1 তথা মোট ছোটো হরফ হল ৩১টি৤
ক খ গ ঘ ঙ
চ ছ জ . ঞ
ট ঠ ড ঢ ণ
ত থ দ ধ ন
প ফ ব ভ ম
য র ল . শ
ষ স হ .  .
.  .  .  .  .    =৩১ 
অর্থাৎ ৩১টি ছোটো হরফ হলে ২১৮ এবং প্রথম ধাপের ১৩০, এই মোট ৩৪৮টি যুক্তবর্ণ লেখা যাবে৤ এগুলিই সর্বমোট বাংলা যুক্তবর্ণ৤যদিও এর বহু যুক্তবর্ণ তথা বানান প্রাচীন এবং বর্জিত, সুতরাং সংখ্যা কমে বর্তমানে বানান অনেক সহজ হয়েছে৤

          [পরবর্তী অনুসন্ধানে এই সংখ্যাদির আমূল সংশোধন হয়েছে৤ বাংলায় বিশুদ্ধ যুক্তবর্ণ হয় দুই বর্ণের(২১১), তিন বর্ণের(১৬৮) এবং চার বর্ণের(১৬)৤ সর্বমোট ২১১+১৬৮+১৬= ৩৯৫(তিনশত পঁচানব্বই)৤ সবগুলিই লিখে পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে, এবং সবগুলিই সফলভাবে লেখা যাচ্ছে৤ চার বর্ণের বেশি বর্ণ মিলে যুক্তবর্ণ বাংলায় নেই৤ অন্য ভাষায় অবশ্য আছে৤]


                   তৃতীয় ধাপ

তৃতীয় ধাপে ব্যবহার করা হবে বাংলা লিপির নব গঠিত রূপ-- “বাংলা ইনজিনিয়ারিং বর্ণমালা”৤ এই লিপি ব্যবহার করা হবে স্বচ্ছ যুক্তবর্ণ পদ্ধতি সহযোগে৤ যে পদ্ধতি এখানে প্রথম এবং দ্বিতীয় ধাপে ব্যাখ্যা করা হয়েছে৤
[ পরে বাংলা লিপির আরও অনেকগুলি নতুন রূপ দেওয়া হয়েছে, যা ব্যবহার করে নতুন বানানে বাংলা লিখলে বাংলা লেখা সহজ এবং সরল হবে৤ তার কিছু উদাহরণ --  
বাংলা বর্ণের আলংকারিকক রূপ৤]

          বাংলা ইনজিনিয়ারিং বর্ণমালা ব্যবহার করলে যান্ত্রিক ছাপা সুবিধাজনক এবং মুদ্রিত পাঠ্যবস্তু অধিকতর সুবোধ্য(legible) হবে৤ হরফের আকৃতি প্রধানত চারকোণা এবং টাইপফেস সমস্ত বডি-মুখ-এর পুরো অংশ দখল করে থাকবে, এতে টাইপফেস বড় হবে এবং বিস্তৃত হবে ফলে ছাপার সময় চাপে ভাঙার ভয় কমবে৤ যেসব পৃথক চিহ্ন-- হস্‌, উ-কার, ঊ-কার, ঋ-কার, কমা, রেফ, চন্দ্রবিন্দু ইত্যাদি পৃথক বা আলগাভাবে ব্যবহার করলে ভেঙে যাওয়া বা খসে পড়ে যাবার যে সম্ভাবনা, তা এতে কমবে কারণ টাইপবডি এখানে বড় হবে এবং তা লাইনের নিচে ঝুলে থাকবে না, বা উপরে খোঁচা হয়ে জেগে থাকবে না৤ টাইপবডি বড় এবং চওড়া হবে, তাছাড়া একটা সারিতে দৃঢ়বদ্ধ থাকার ফলে আলগা হয়ে ঘুরে উলটে যাওয়া বা পড়ে যাবার ভয় থাকবে না৤ হরফের আকৃতি সরল হওয়ায় এবং “যুক্তাক্ষর” না থাকায় হরফ গাঁথিয়েদের হরফ চেনা, হরফ গাঁথা সহজতর হবে৤যদিও এটা খানিকটা অভ্যাসের ঘোরে তাঁরা করে যান, কিন্তু প্রুফ সংশোধনের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটি সুবিধাজনক হবে, অর্থাৎ প্রুফ সংশোধন এবং হরফ গাঁথিয়ে উভয়ের পক্ষেই ব্যাপারটা সুবিধাজনক৤ বাংলা ইনজিনিয়ারিং বর্ণমালার নিজস্ব বৈশিষ্ট্যের জন্য হরফ-মুখ অপেক্ষাকৃত অনেক বড় হবে এবং তা হরফ গাঁথিয়ে  এবং প্রুফ রিডার ও পাঠকদের পক্ষে সুবিধের হবে৤ বয়স্ক পাঠকেরা তো খুদে হরফের কষ্টে বইপত্র পড়তে পারেন না৤ তাঁদের এতে সময় কাটানোর এবং জ্ঞান লাভের স্পৃহা ব্যাহত হয়৤


[একটু আরও বেশি কল্পনা প্রসারিত করে
বাংলা বর্ণের ত্রি-মাত্রিক আংলকারিক রূপ দেখা যাক--

ঢাকা 
ঢাকা



বাংলা




শিল্পীরা এদিকে মন দিলে বাংলার ভাণ্ডার ভরে উঠবে৤ ইংরেজিতে অন্তত হরফের হাজার খানেক আলংকারিক রূপ আছে বাংলায় তেমন কই?]




নব গঠনের সরল ইনজিনিয়ারিং বর্ণমালা তথা রৈখিক জ্যামিতিক গঠনের বর্ণমালা ব্যবহার করলে এটির নিজস্ব গঠন বৈশিষ্ট্যের জন্য মুদ্রণ-স্থান(Printing Space) কম লাগবে, অথচ হরফ-মুখ(Type Face) বড় হবে৤ এটাতে লাভ দ্বিমুখী-- (১)মুদ্রণ-ব্যয় কমবে, (২)পড়ায় আরাম বাড়বে৤
         
          (১)মুদ্রণ-ব্যয় কেন এবং কীভাবে কমবে? এই নব গঠনের হরফ হল ইংরেজি হরফের মতো একস্তর বা সমরৈখিক Monotier তথা Linear. বর্তমান বাংলা লেখা এবং ছাপা ত্রি-স্তর তথা Three-Tier হিসেবেই একমাত্র ব্যবহারযোগ্য৤ এটি একস্তর বা Monotier হবার ফলে উপরে নিচে কোন চিহ্ন বা হরফ না থাকায় নব গঠনের লিপিতে মুদ্রণ-উচ্চতা বা  Printing Height লাগবে অবিশ্বাস্য কম, মাত্র অর্ধেক৤ এতে মুদ্রণ-স্থান সাশ্রয় হবে ৫০%শতাংশ৤ যে বই ছাপতে ১০০ পাতা লাগে সে বই ছাপতে ৫০ পাতায় হয়ে যাবে৤ আর এ ছাড়া বর্তমান ছাপায় দু-লাইনের মধ্যেকার ফাঁক বা inter line space ইংরেজির চেয়ে বেশি লাগে, কারণ রেফ, চন্দ্রবিন্দু, ই-ঈকার, উ-ঊ-কার, হস্‌, ঋ-কার ইত্যাদির ভাঁজ খাঁজ যাতে জড়িয়ে না যায় বা কাছাকাছি হয়ে ঘন এবং দুর্বোধ্য না দেখায়, পাঠ-যোগ্যতা কমে না যায়, সেজন্য বাংলা মুদ্রণে দু-লাইনের মাঝে ফাঁক বেশি লাগে, এতেও বাংলা ছাপায় জায়গা বেশি লাগে৤ কিন্তু নব গঠনের লিপিতে দু-লাইনের মধ্যেকার ফাঁক অনেক কমানো যাবে, এমনকী ইংরেজির চেয়েও তা কমানো যাবে৤ জোর করে ছাপার সৌন্দর্য বা বোধ্যতা হানি করে তা করতে হবে না৤ সুতরাং এ জন্য যদি পাঁচ শতাংশ মুদ্রণ-স্থান বেঁচে যায় তবে তা বাংলা ছাপাখানার পক্ষে এক অতিরিক্ত লাভ বা ফাউ পাওয়া৤


         
          এই যে ৫০+৫=৫৫ শতাংশ স্থান সাশ্রয় তার পুরোটা কিন্তু বাস্তবক্ষেত্রে সত্যি সত্যি লাভ করা যাবে না৤ তার কারণ নতুন ব্যবস্থার ফলে লাইন বরাবর পাশের দিকে স্থান কিছুটা বেশি লাগবে৤ তবে এটা কোন মতেই ১০-১৫ শতাংশের বেশি হবে না৤ আঙ্কিক হিসেবে তা-ই দাঁড়াচ্ছে অর্থাৎ নিট লাভ ৪০-৪৫ শতাংশ স্থান-সাশ্রয়৤ যদি এটা আরও একটু ছাড় দিয়ে ধরি তবে ৩৫-৪০ শতাংশের কম হওয়া উচিত নয় কোন ক্রমেই৤
          এছাড়া, ব্যায় সাশ্রয় আরও আছে৤ টাইপ-কেস কমবে, যুক্তবর্ণ থাকবে না৤ বর্তমানে বাংলা ছাপার চারটে হরফ-ডালা লাগে৤ নতুন ব্যবস্থায় ইংরেজি ছাপার মতো কেবলমাত্র দুটো হরফ-ডালা(Type Case) হলে চলবে৤ টাইপ ঢালাই কারখানা বা ফাউন্ড্রিগুলিতে উৎপাদন-ব্যয় কমবে যুক্তবর্ণ জনিত ঝঞ্ঝাট কমার জন্য৤ এমনকী অকারণ অল্প ব্যবহৃত বা অব্যবহৃত হরফ তৈরি, কেনা-বেচা বা হিসাব রাখার সমস্যা কমবে৤ ছাপাখানকে অকারণ বসিয়ে-রাখা টাইপ কিনতে হবে না৤ তাছাড়া, বাংলা হরফ ব্যবহারের তুলনাংক (Letter frequency) বের করার ফলে, যে হরফ যে অনুপাতে লাগে কেবলমাত্র সেটুকু ছাপাখানায় কিনলে চলবে৤ কেবলমাত্র অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করতে হবে না৤
           জ্যামিতিক গঠনের নব্য এই হরফ ব্যবহার করলে কেবল হাতে হরফ গাঁথায় সুবিধা হবে তা নয়, অন্যান্য সকল যান্ত্রিক ব্যবস্থায় এটি ব্যবহার করলে যন্ত্র সরল হবে, কারণ যুক্তহরফের ব্যবহার না থাকায়, অকারণ-জটিলতা কমবে৤ যন্ত্রিক কম্পোজিং, টাইরাইটিং, টেলিপ্রিন্টার ব্যবহার সহজ হবে৤ যন্ত্রের জটিলতা কমায় যন্ত্রের উৎপাদন ব্যয় কমবে এবং যন্ত্রের ব্যবহারিক উপযোগিতা বাড়বে৤ কম্পোজিটারগণ বেশি পাতা কম্পোজ করতে পারবেন, টাইপকারকগণ বেশি পাতা টাইপ করতে পারবেন, যন্ত্র ব্যবহারে তাঁরা দ্রুত দক্ষ হয়ে উঠবেন৤ যে-কোন ধরনের শব্দ সহজে কম্পোজ করা বা লেখা যাবে৤ হরফ গাঁথার বা টাইপ করার যে flexibility বিচলতা তথা সহজে জোড় বাঁধানোর ক্ষমতা বাড়বে৤ তা অভূতপূর্ব, এবং তা ইংরেজি হরফ-ব্যবস্থার সাথে তুল্য৤ নবগঠনের লিপি ব্যবস্থার ফলে বর্তমানে প্রচলিত টাইপফেস ব্যবহারের অবিজ্ঞানোচিত বঙ্গীয় পদ্ধতির আমূল পরিবর্তন হয়ে তা হয়ে উঠবে ইয়োরোপিয় ধাঁচের সহজ এবং তেমনি সরল৤ বাংলা লিপি ব্যবহার Monotier তথা linear অর্থাৎ এক-স্তর বা সমরৈখিক হয়ে ওঠায় তা হবে বাংলাভাষার পক্ষে এক ধাপ অগ্রগতি৤ এ সকল সবিধা লাভ হবার পরেও বাংলা লিপিমালা আগের মতোই পূর্ণ ও অক্ষত থাকবে, বরং আরও সমৃদ্ধ হয়ে উঠবে, ফলে ইয়োরোপিয় পদ্ধতির চেয়ে বাংলা ছাপা তথা সামগ্রিক ভাষারীতি-- ধ্বনি, বর্ণ, লিখন ইত্যাদি অনেক বেশি সমৃদ্ধ হবে৤
          নিচে বাংলা ইনজিনীয়ারিং বর্ণমালা ব্যবহার করে একটি লিখন দেখানো হল:--
বাংলা ইনজিনীয়ারিং বর্ণমালা
বিষণ্ণ ঔদাসীন্যে ঊষাবৌদি
বাংলাভাষায় প্রচলিত ঈশপের
নিখুঁত গল্পটির অর্ধেক
বলতেই ঋতু ভুঁইঞা আর
ঐন্দ্রিলা হৈ-হৈ করে উঠল--
ওঃ! থামো বুঝেছি বড্‌ডো
পুরানো ঢঙের গল্প-- মূঢ়
 আড়ম্বর ও আত্মশ্লাঘার ফল
জীবনে বিঘ্ন ও বৃহৎ ক্ষতি--
এই নীতি যার না?
মিত্র মনোজ     ১২৩৪৫৬৭৮৯০   ১২৩৪৫৬৭৮৯০
বাংলাভাষা          বন        বাংলা





এই বাক্যটিতে বাংলা সকল হরফ তথা স্বরবর্ণ, ব্যঞ্জনবর্ণ, স্বরচিহ্ন বা কারচিহ্ন, ৮টি ফলা ইত্যাদি আছে৤ তেমনি উদ্দেশ্য নিয়ে এটি তৈরি৤ এছাড়া, সংখ্যা, বিভিন্ন ধরনের হরফ অঙ্কনরীতি ইত্যাদিও দেখানো হয়েছে৤(এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে দেখুন--বাংলা ইনজিনীয়ারিং বর্ণমালা, পৃঃ-৪৬-৫০, পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি প্রকাশিত বই-- প্রসঙ্গ: বাংলাভাষা)৤ বাংলা ইনজিনীয়ারিং বর্ণমালা তৈরি হওয়াতে এবং এটি প্রয়োগ করে লিখতে গিয়ে বাংলা লেখার পদ্ধতির এক আমূল পরিবর্তন হয়েছে৤ এতে বাংলা লিপির মুক্তি ঘটেছে-- তার শৃঙ্খল খুলে গেছে৤ তাই খুব সহজে বাংলা লিপির সহস্র আলংকারিক রূপ অনতিকালমধ্যে লভ্য হবে৤ ইংরেজি হরফের এ রকম আলংকারিক রূপ অঢেল পাওয়া যায়, বাংলাতে এবার তা পাবার দরজা খুলে গেল৤
          এই লিপি অতি সরল সহজ গঠনের এবং লিখন পদ্ধতি সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক হওয়ায় লিখনের পাঠযোগ্যতা বেড়ে যাবে৤ অল্প শিক্ষিত বা অবঙ্গভাষীর পক্ষেও বাংলা পড়া কঠিন হবে না৤ একটু চেষ্টা করে কেবলমাত্র হরফ পরিচয় ঘটাতে পারলেই সহজে বাংলা পড়া যাবে৤

          ২৤জ্যামিতিক গঠনের এই লিপিতে টাইপ সাইজ বর্তমান টাইপ সাইজের দ্বিগুণ হবে, ফলে পড়া আরামদায়ক হবে৤ বিশে করে বয়স্ক মানুষদের কষ্ট লাঘব হবে, টাইপ তথা হরফ মোটা Bold করারও দরকার হবে না৤ লিখনের সহজ পাঠ-যোগ্যতা একটি ভাষার পক্ষে অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যদি বাংলায় তা লাভ করা যায়, তবে তা খুব আশা এবং আনন্দের কথা৤ দরকার হলে অনেক ছোটো টাইপ সাইজেও নানা জিনিস ছাপা যাবে৤ বাংলায় বর্তমানে সর্বনিম্ন যে টাইপ সাইজে ছাপা যায়, হাতে হরফ গাঁথার ক্ষেত্রে-- তা হল ৮পয়েন্ট-- এই কমসাইজের টাইপে ছাপলে তা আর সাধারণভাবে পাঠযোগ্য থাকে না৤ নব্য গঠনের হরফে আশা করা যায় ৪ বা ৫ পয়েন্টে অবধি নামা যাবে, এবং যা পাঠযোগ্যও থাকবে৤
         
          নতুন হরফে লেখা ভালোভাবে পাঠযোগ্য ১০ লাইন লিখতে স্থান লেগেছে ১৭মিমি., এই মাপ দুই লাইনের মধ্যে ফাঁক ধরে৤ সুতরাং লাইনের গড় উচ্চতা ১.৭ মিমি., (লাইনের মধ্যেকার ফাঁক ধরে)৤ পিটিএস ছাপায় ৪৮ পয়েন্ট মাপের হরফে যার উচ্চতা হল ১০মিমি.(স্কেলে মেপে), অথচ এই ৪৮ পয়েন্টের জন্য মুদ্রণ-উচ্চতা লাগে ১৬.৯৩৩ মিমি.(অঙ্ক কষে ৭২ পয়েন্ট=১ইঞ্চি=২৪.৩৯৯৯মিমি. ধরে)৤ কিন্তু ইনজিনীয়ারিং বর্ণমালায় ১০ মিমি. উচ্চতার হরফের জন্য মুদ্রণ-উচ্চতা লাগবে ১০মিমি. মাত্র৤ অর্থাৎ স্থান সাশ্রয় ৪১%শতাংশ৤ কোনও একটি ফাউন্ড্রি টাইপে এই অনুপাত হল-- ১১.৭৫÷১৬.৯৩৩×১০০=৬৯.৩৯%শতাংশ, অর্থাৎ নতুন হরফে স্থান সাশ্রয় হবে ৩১% শতাংশ৤ আবার ৮ পয়েন্ট টাইপে ১০ লাইনের তুলানয় নব্য লিপিতে স্থান সাশ্রয় ১.৭ ÷ ৪.৭৫×১০০) ৩৫.৭৮৯% শতাংশ৤ আনন্দবাজার, বর্তমান, গণশক্তি, আজকাল, যুগান্তর সম্প্রতি যে টাইপে ছাপা হয় (আগস্ট ১৯৮৯) সেই সকল কাগজের খবরের হেডিং টাইপ পরীক্ষা করে সাশ্রয় লক্ষ্য করা যাচ্ছে যথাক্রমে-- আবা-৪৮.৯৪, বর্তমান-৪৮.৯৪, গণশক্তি-৫০, আজকাল-৫০, যুগান্তর-৪৮.১৪ অর্থাৎ গড়ে ৪৯.২০৪%শতাংশ৤

          চতুর্থ ধাপ

চতুর্থ ধাপে বাংলা ভাষা ও বানানের আমূল সংস্কার করা হবে৤ প্রথম দ্বিতীয় তৃতীয় এবং চতুর্থ এই প্রতিটি ধাপে সময়ের ব্যবধান হবে পাঁচ বছর করে৤

          চতুর্থ ধাপের প্রথম স্তর থেকে এনে প্রথম ধাপের সাথে মিশিয়ে বাংলায় একটি নতুন লিপি সংযোজিত হবে৤ লিপির ধ্বনিটি প্রচলিত আছে, এবং লিপিরূপও নানা উপায়ে প্রকাশ করা হয়ে থাকে৤ এটি হল “এ্যা” ধ্বনি৤ এটি একটি স্বরধ্বনি, এর স্থান হবে স্বরবর্ণের মধ্যে৤ অ আ ই ঈ উ ঊ ঋ এ এা ঐ ও ঔ(১২)৤ বাংলায় এটির জন্য প্রচলিত এবং প্রস্তাবিত সব লিপিরূপ পরীক্ষা করে এটির লিপিরূপ স্থির করা হয়েছে-- এা৤ এর লিপিচিহ্ন বা কারচিহ্ন তথা সেকেন্ডারি ফর্ম হবে ৙঄, অর্থাৎ এ-কার(ে) উলটে দিয়ে তার সঙ্গে আ-কার(া) জুড়ে৤ এর ফলে কলম না তুলে এক নাগাড়ে লেখা চলবে এবং হরফের ডানদিকে তথা পরে এই এা-কার(৙঄) চিহ্নটি বসার ফলে টাইপ করা, কম্পোজ করা, লেখা ইত্যাদি সকল ক্ষেত্রে সুবিধা হবে৤ এমনকী আমরা এই ধ্বনিটি যোজিত বর্ণের পরেই উচ্চারণ করি-- দেখা=দ৙঄খা, ফেলা=ফ৙঄লা, বেলা=ব৙঄লা৤

    
দেশ=দ৙শ, বেশ=ব৙শ ইত্যাদি ]

এা হরফটি হাতে করে একটানে লেখার সুবিধা আছে৤ ‘এ’ হরফের নিচের বাহুটি লেখার সময়ে কলম না তুলে, ‘এ’ হরফটির মাথার উপর দিয়ে ঘুরিয়ে এনে ডান পাশে আ-কার(া) লিখতে পারা যাবে৤ এা=







ইত্যাদি৤ এছাড়া, ছাপাখানায় এর জন্য কোন নতুন টাইপের প্রয়োজন নেই, ‘এ’ আর ‘঄’ জুড়ে হবে এা৤ হাতে হরফ গাঁথা, লাইনো, মনো বা পিটিএস-- সর্বত্রই এা সহজ লভ্য এবং সহজে ব্যবহার যোগ্য৤ অর্থাৎ প্রথম ধাপে ৪(ক) স্তরও সংযুক্ত হচ্ছে৤

          ৪(খ) স্তর-- এই কাজটি দ্বিতীয় ধাপের সাথে জুড়ে দেওয়া যেতে পারে৤

          (১)স্বরবর্ণের অন্যান্য হরফের মতো অ-এর কোন চিহ্ন নেই৤ কিন্তু থাকা দরকার৤ যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে শব্দকোষের অ-ধ্বনি লুপ্ত হয়ে হলন্ত হয়ে উঠেছে এবং ক্রমে আরও হবে, সে জন্য হলন্ত ধ্বনির সাথে পার্থক্য বোঝাবার জন্য এই চিহ্ন-- অ=৹ থাকা দরকার৤ অমিতাভ্ নয়, অমিতাভ৹৤ অসম(অসম্‌=আসাম) কিন্তু অসম৹(সমতা নেই বোঝাতে)৤ সুনীত(সুশীত--নাম) সুশীত৹(সুন্দর শীতযুক্ত)৤ বিজিত(বিজিৎ--নাম) বিজিত৹(পরাজিত)৤ স্ত্রৈণ(স্ত্রৈণ নহে), স্ত্রৈণ৹ কমল=কমল৹(কমিল), কম৹ল(পদ্ম)৤
          শব্দমধ্যে এবং শব্দান্তে এ রকম বহু দেখা যায়-- শ্রম(শ্রম্‌) শ্রমবিভাগ(শ্রম৹বিভাগ), জন(জন্‌)-- জন্‌ খাটা জন৹গণ৤ বল্‌(শক্তি), বল৹বান৤
          মন(মন্‌), কিন্তু মন৹মোর মেঘের সঙ্গী৤ মায়াবন্‌-- কিন্তু মায়াবন৹ বিাহরিণী হরিণী.... , এমন(এামন বা এমনি), এমন৹ দিনে তারে ....৤ ইত্যাদি৤

          (২)ঈ=ই, ী=ি গ্রহণ করলে বানান সরল হয়৤ বাংলায় এই ধ্বনির হ্রস্ব দীর্ঘ উচ্চারণ নেই৤ পার্থক্য করা যায় না৤ ঈশপ=ইশপ, ঈশ্বর=ইশ্বর, ঈগল=ইগল, ঈর্ষা=ইর্ষা, তবে হাতে লেখা, ছাপার কম্পোজ করা, টাইপ করা এবং বলার কালে উচ্চারণ করা ইত্যাদি সুবিধার দিকে লক্ষ্য রেখে ী-কার চিহ্নটি বাতিল হলেও ি-কার চিহ্নের বদলি হিসেবে ী-কার চিহ্নটি রাখা হবে,(উচ্চারণ হ্রস্ব করা হবে, দীর্ঘ নেই বলে), অর্থাৎ ী=ি ধরা হবে৤ আমি=আমী, তুমী, তীনী, যেদীন,কী, দীদী, শীশী, নীকট, একটী, দুটী, চীঠী, অফীস৤
          (৩) ঊ=উ, ূ = ু  গ্রহণ করলে বানান সরল হয়৤ বাংলায় দীর্ঘ ঊ-এর উচ্চারণ নেই৤ পার্থক্য করা যায় না৤ উন, উরু, উর্ধ্ব, উর্মী, উষর, উহ্য,৤ কুপ, কুল, ধুপ,  মুহুর্ত, নুপুর, দুর, ধুসর, মুমুর্ষু, মুঢ়, পুজা, ভুত, ধুলি৤
          (৪)ঙ=ং গ্রহণ করলে শব্দ প্রয়োগে এবং বানানে অনেক আধুনিক এবং স্মার্ট হওয়া যায়৤ বানান খুব সহজও হয়৤ অংক, বাংলা, গংগা, সংকট, শৃংখল, শংখ, রং, চাংগা(চাংয়া), ভাংয়া, রাংয়া, বাংয়ালি, বংগীয়, আংয়িনা, রংগ(রঙ্গ), রংগ, রসভংগ৤
          (৫)ণ=ন হলে বানান সরল হয়৤ মূর্ধন্য-ণ এর উচ্চারণ বাংলায় নেই৤ পন রন, জনগন, বিবরন, প্রান, কোন(কোণ), অপরাহ্ন(সংস্কৃত বানান হ+ণ), লবন৤
          (৬)ঃ= হ গ্রহণ করলে বানানে কিছু সরলতা আসে, দ্বিধা কমে, একটি অকারণ হরফের বোঝা কমে, অথচ উচ্চারণে ব্যত্যয় বা বিভ্রাট ঘটে না৤ হ্‌-এর বিকল্প বর্জন করার জন্য ঃ(বিসর্গ) বর্জন করা হবে৤
বাঃ=বাহ্‌, আহ্‌, ইহ্‌, উহ্‌, ওহ্‌৤
          (৭)ত আছে তাই ৎ বাদ৤ বৃহৎ=বৃহত্‌, বৃহত, রণজিৎ=রনজীত, রন৹জীত্‌৤

          তৃতীয় ধাপে ৪(গ) স্তরে--
(১)ঋ=৒রী/রী-- ঋণ=৒রীন, ঋষিকেষ=৒রীশীকেশ(৒রীশীক৙শ পরবর্তী ধাপে), হৃশিকেশ= হ্‍রীশীকেশ (হ্‍রীশীক৙শ), ঘৃত=ঘ্‍রীত, গৃহ=গ্‍রীহ৤
(২)ষ=শ-- ষাঁড়=শাঁড়, তুষ=তুশ, বিষ=বীশ, পাষাণ=পাশান, ভাষা=ভাশা, কৃশি=ক্‍রীশী৤

          চতুর্থ ধাপের তিনটি স্তর যথাক্রমে প্রথম ধাপ, দ্বিতীয় ধাপ এবং তৃতীয় ধাপে প্রয়োগ করে ছাপার পদ্ধতির অগ্রগতির সাথে সাথে বানান এবং ভাষার সংস্কার কাজও করতে হবে৤

          সম্পূর্ণ চতুর্থ ধাপটি বিশাল৤ এটি দীর্ঘ এবং বিস্তৃতভাবে আলোচনা হওয়া দরকার, কারণ এখানেই বড় বাধা আসবে৤ কিন্তু দীর্ঘ আলোচনা না করে-- কারণ তাতে ৬০/৭০ পৃষ্ঠা আলোচনা করা দরকার, তাই ছোট্ট উদাহরণ দেওয়া হল, সংক্ষেপে বীজাকারে বিষয়টি বোঝাবার জন্য৤

স্বরবর্ণ--                          এা    
স্বরবর্ণ চিহ্ন--                       ৙঄    
স্বরচিহ্ন যোগ--  ক৹   কা  কী   কু  ক৙   ক৙঄  কৗ
প্রচলিত --           কা   কি  কু  কে   ক্যা  কো

          এই সাতটি স্বরবর্ণের সজ্জা হবে--
                  এা   

          বিষণ্ণ ঔদাসীন্যে ঊষাবৌদি বাংলাভাষায় প্রচলিত ঈশপের নিখুঁত গল্পটির অর্ধেক বলতেই ঋতু ভুঁইঞা আর ঐন্দ্রিলা দারুণ হৈ-হৈ করে উঠল, বিজ্ঞের মত বলল -- ওঃ, ব্যাস্‌ ব্যাস্‌ আর জ্ঞান পরীক্ষা কোরোনা, থামো বুঝেছি বড্‌ডো পুরানো ঢঙের ক্যামন এক গল্প-- মূঢ় আড়ম্বর ও আত্মশ্লাঘার ফল জীবনে বিঘ্ন ও বৃহৎ ক্ষতি এই নীতি যার না?

          উপরের বাক্যটির মধ্যে সকল স্বরবর্ণ, সকল ব্যঞ্জনবর্ণ, সকল স্বরচিহ্ন, এবং সবকটি ফলা ইত্যাদি আছে৤ এই বাক্যটিকে বাংলা নতুন-বানানে তথা বাংলাভাষা সংস্কার করার পরের বানানে যদি লেখা যায় তবে তা হবে নিচের প্রদর্শিত পদ্ধতি মত--

          বীশন্ন ওউদাশীন্ন৙ উশাবউদী বাংলাভাশায় প্‍রচলীত ইশপ৙র নীখুঁত গল্পটীর অ৒ধ৙ক বলত৙ই ৒রীতু ভুঁইয়াঁ আর ওইন্দ্‍রীলা দারুন হই-হই কৗর৙ উঠল, বীগ্গ৙৺র মতৗ বলল-- ওহ্‌, ব৙঄স্ ব৙঄স্ আর গ৙঄৺ন পরীখ্খা কৗরৗনা, থামৗ বুঝ৙ছী বড্ড পুরানৗ ঢংয়৙র ক৙঄মন এাক গল্প-- মুঢ়৹ আড়ম্বর ও আত্তশ্লাঘার ফল জীবন৙ বীঘ্ন ও ব্‍রীহত্‌ খতী এই নীতী জার না?  
          এমনি একটি কবিতা: বানান এবং বর্ণমালা সংস্কারের পর--

ওই যে আকাশ ঢাকা
গহন ঘন চিকুর আঁধার এমন
দেখিছ উপরে ঠায়,
ক্ষণে সাফ ক্ষণে ভরা
আকাশ সড়কে সজল এ কী গূঢ়
ভাতি দেখা যায়,
ফুটিবে বুঝি কোন্‌ আলো-ফুল
অংশুর ডালিতে তথায়৤

নতুন লিখন-রীতিতে এই কবিতাটি লিখলে হবে--
ওই জ৙ আকাশ ঢাকা
গহন ঘন চীকুর আঁধার এামন
দ৙খীছ উপর৙ ঠায়,
খন৙ সাফ খন৙ ভরা
আকাশ শড়ক৙ শজল একী গুঢ়৹
ভাতী দ৙঄খা জায়,
ফুটীব৙, বুঝী কৗন্‌ আলৗ-ফুল
অংশুর ডালীত৙ তথায়৤

          ব্যঞ্জনবর্ণের নতুন সজ্জা--
          হ ক খ গ ঘ
য় ট ঠ ড ঢ ড় ঢ়
চ ছ জ ঝ শ ন
র ল স ত থ দ ধ
প ফ ব ভ ম ং      =৩১টি

          ভাষা সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা কেন তা ছাপার প্রথম ধাপে যদি অনুভূত নাও হয়, দ্বিতীয় ধাপে এসে চতুর্থ ধাপের প্রয়োজনীয়তা তথা ভাষা ও বানান সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করা যাবে৤ অর্থাৎ বানান করতে হবে উচ্চারণমুখী, সে উদ্দেশ্যেই দ্বিতীয় ধাপ প্রবর্তন করা৤
          ভাষার সাথে মানুষের অতি গভীর আর্থ-সামাজিক সমপর্ক আছে, তাই ভাষা সংস্কারের সাথেও সে সম্পর্ক বিদ্যমান৤ ভাষা সহজ সরল হলে, বানান নির্ভুল হলে এবং দৃঢ় হলে দেশ দশ তথা জাতির অগ্রগতি ঘটে৤ তাই ভাষা সংস্কার তথা উন্নতির চেষ্টা হল আত্মোন্নতিরই চেষ্টা৤




পত্রিকায় প্রকাশিত লেখাটির কপি নিচে দেখানো হল--

























কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন