সোমবার, ৩ জুলাই, ২০১৭

বাংলা বানান-সংস্কার পরিকল্পনা


২৩/০৬/২০১৭ শুক্রবার৤


বাংলা বানান-সংস্কার পরিকল্পনা

অহনলিপি-বাংলা১৪  ফন্ট AhanLipi-Bangla14 font  
ডাউনলোড করে নিজেকে আধুনিক করে তুলুন৤  

অহনলিপি-বাংলা১৪ ফন্ট হল-- 
(১)সেকেন্ড জেনারেশন ফন্ট
(২)স্মার্ট ফন্ট
(৩)বর্ণসমবায় ফন্ট
(৪)আলটিমেন্ট ফন্ট
এবং
(৫)বাংলা ফন্ট টেকনোলজির ফলিত প্রয়োগ৤








লেখাটি অহনলিপি-বাংলা১৪(AhanLipi-Bangla14) ফন্টে পড়তে হবে, নচেৎ লেখাটি দুষ্পাঠ্য হবে৤  

ফন্ট প্যাকেজ ডাউনলোড লিংক:






সঙ্গে দেওয়া ফাইল দেখে নিতে হবে৤

অহনলিপি-বাংলা১৪ ডিফল্ট টেক্সট ফন্ট সেটিং
(AhanLipi-Bangla14 Default text font setting)
Default text font setting ডিফল্ট টেক্সট ফন্ট সেটিং

এবং


অহনলিপি-বাংলা১৪ ডিফল্ট ইন্টারনেট সেটিং
(AhanLipi-Bangla14 Default Internet setting)

(Default font setting ডিফল্ট ফন্ট সেটিং)

on internet(Mozilla Firefox)
(top left) Tools  
              Options--contents
              Fonts and Colors
              Default font:=AhanLipi-Bangla14
                        Advanced...
                                    Fonts for: =Bengali
                                    Proportional = Sans Serif,   Size=20
                                    Serif=AhanLipi-Bangla14
                                    Sans Serif=AhanLipi-Bangla14
                                    Monospace=AhanLipi-Bangla14,  Size=20
                                    -- OK
            Languages
            Choose your preferred Language for displaying pages
            Choose
            Languages in order of preference
            Bengali[bn]
            -- OK
 -- OK

          এবারে ইন্টারনেট খুললে ‘অহনলিপি-বাংলা১৪’ ফন্টে সকলকিছু দেখা যাবে৤ নেটে এই ফন্টে সব কিছু লেখাও যাবে৤








বাংলা বানান-সংস্কার পরিকল্পনা

মনোজকুমার দ. গিরিশ 



          বাংলায় বানান নিয়ে নানা সমস্যা বাংলা ভাষার অগ্রগতিকে ব্যাহত করছে৤ আর এ সমস্যা আছে সম্ভবত বাংলাভাষার জন্মকাল থেকে৤ কিন্তু কেন এ বানান সমস্যা?
          বানান সমস্যার প্রকৃতি--
                    কী ধরনের সমস্যা হয় তা থেকে বোঝা যাবে, বাংলা বানান সমস্যা কেন? ধরি, লেখা হল ‘রীতি’ এই বানানটি শুধু একভাবেই লেখা উচিত, কিন্তু তা লেখা যাবে ৪ ভাবে-- রীতি রীতী, রিতি রিতী৤ ‘সবিশেষ’ বানানটি ১০৮ রকম করে লেখা যায়!  
বাংলায় আছে প্রায় দেড় লক্ষ শব্দ তার প্রতিটি শব্দ ধরে ধরে সংস্কার করা যাবে না৤ কারণ “সবিশেষ” শব্দটির বানানই যদি হয় ১০৮ রকম৤ তার হিসেব হল--  ৩×২×২×১×৩×৩=১০৮৤ শ,ষ,স প্রতিটি তিনরকম করে হতে পারে, ই-ঈ দুরকম হতে পারে, ব দুটি হতে পারে-- বর্গীয় ব, এবং অন্তঃস্থ-ব(ৱ, W, )৤ তার ফলে হিসেবটি এমনি দাঁড়াচ্ছে৤ একটি শব্দেই যদি এত ব্যত্যয় হবার আশংকা থাকে, তবে সকল শব্দ মিলে তাতে কী ভয়াবহ অবস্থা হতে পারে!
বাংলা বানান সম্পর্কে যার ধারণা কম সে কোন্‌ বানান যে লিখবে তা ভেবে পাবে না৤অর্থাৎ ই-ঈ, এবং স্বরচিহ্ন ি/ী উচ্চারণ বাংলায় একই রকম৤ তাই কোন্‌টা যে লেখা হবে তা নিয়ে সমস্যা৤ আর এই বানান নিয়ন্ত্রিত হয় প্রধানত সংস্কৃত ভাষার নিয়ম মেনে৤ কারণ বাংলা বর্ণমালা গ্রহণ করা হয়েছে সংস্কৃতবর্ণমালা থেকে৤ তাই তার বানান রীতিও সংস্কৃত অনুসারী হবে এটাই তো ঠিক৤ কিন্তু সমস্যা হল, বাংলায় সংস্কৃতবর্ণমালার ধ্বনি যথাযথ রক্ষিত নেই৤ মুখে ‘রীতি’ বললে বোঝা যাবে না, এর কোন্‌টা হ্রস্ব-ই কার, আর কোন্‌টা ঈ-কার৤ এই সমস্যা অবশ্য সর্বত্র নয়, ‘কাল’ এবং ‘খাল’ বললে সকলেই ঠিক ঠিক লিখবে, কারণ এখানে উচ্চারণ যথাযথ করা হয়, এবং যথাযথ রক্ষিত আছে৤ তাই যেখানে ধ্বনির বিপর্যয় ঘটেছে ভুল সেখানেই হয়৤ বোঝা যায় না ধ্বনির কোন্‌ বর্ণলিপিটি উদ্দিষ্ট৤ সেই অনুযায়ী তার বানান লেখায়ও সমস্যা হয়৤
বাংলায় বর্ণ ব্যবহারের হিসেব-- স্বরবর্ণ ৫.২০৭৫ শতাংশ, ব্যঞ্জন বর্ণ ৫৪.৩১৪ শতাংশ, স্বরচিহ্ন(কার চিহ্ন তথা আ-কার, ই-কার) ৩২.২৫৪ শতাংশ, ফলা চিহ্ন(ব্যঞ্জন চিহ্ন) ৮.২২৪ শতাংশ৤
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডঃ সমর ভট্টচার্য আশির দশকে কম্পিউটারে বাংলা লেখার প্রথম সফ্‌টওয়্যার বানিয়েছেন, তিনি জানিয়েছেন, বাংলায় এ্যা=এা ব্যবহার হয় ২.৭৯২শতাংশ৤পণ্ডিত যোগেশচন্দ্র রায় বিদ্যানিধি  ইংরেজি æ বর্ণধ্বনিটির বাংলা লিপি বানিয়েছেন ‘এা’(বাংলা ভাষার লিখন ও পঠন--যোগেশচন্দ্র রায় বিদ্যানিধি, কি লিখি?--ওরিয়েন্ট বুক কোম্পানি, ১৯৫৬)৤ এটিই মনে হয়, এই ধ্বনিটির সঠিক লিপিরূপ æ =এ্যা=এা৤
বাংলায় বিদেশি শব্দ আছ ৪.৫৫ শতাংশ, সংস্কৃত থেকে তৈরি বা দেশি শব্দ ৫১.৪৫ শতাংশ, এবং খাঁটি সংস্কৃত শব্দ ৪৪ শতাংশ৤
          বাংলা বানানে এরকম ভুল কোথায় কোথায় হয় দেখা যাক--
          অ আ ই এ ঐ ও ঔ-- ১১টি স্বরবর্ণ

          ক খ গ ঘ ঙ
          চ ছ জ ঝ
          ট ঠ ড ঢ
          ত থ দ ধ ন
প ফ ব ভ ম
র ল
স হ
ড় ঢ় য় ৎ
ং ঃ ঁ           --৩৯টি ব্যঞ্জনবর্ণ
প্রধান বা মুখ্য বিচ্যুতি হয়-- ঈ, ঊ; ঞ, ণ, য, ব, ষ-- এই ৭টি নিয়ে, তাই
সংশোধ্য/সম্মার্জ একক, বা যুগ্ম, বা গোষ্ঠী এমনি--
প্রাসঙ্গিক বর্ণ এবং বর্ণচিহ্নগুলি-- ই=০.৯৪৪৯, ি=৫.২৮, ঈ= নগণ্য, ী=১.৮১৯, উ=০.৫১৭১, ু=১.৬৫৮, ঊ=নগণ্য, ূ=০.১২৪৮, ঋ=নগণ্য, ৃ=০.১৬৯৪, জ=১.৫৭০, য=২.১৯৩(য এবং য-ফলা মিলে), ঞ=০.০২৬৭৫, ণ=০.৩৮৩৩, ন=৪.৯৯২, শ=০.৭৩৯৯, ষ=০.৩৭৪৪, স=২.৮৬২
ব=৩.৫৪০, দুই ব-এর মধ্যে বাস্তব তফাৎ কিছু নেই৤ এটিকে ভুলের মধ্যে ধরলে ভুলের সংখ্যা বাড়বে৤ বর্তমানে তো অন্তস্থ-ব বর্ণমালা থেকে বাতিল করা হয়েছে৤ কারণ বাংলায় বর্গীয়-ব এবং অন্তঃস্থ-ব, এই দুটি বর্ণের উচ্চারণে বা বর্ণের গঠনে কোনও পার্থক্য নেই৤ সুতরাং এর দুটিকেই রেখে দেওয়া অকারণ, তাই অন্তঃস্থ-ব(ৱ, W, ) বাতিল৤ 
বাংলায় সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত বর্ণ হল --র(১০.৩৭%)৤ এর দুটি ফলা রূপও আছে৤ বানান সংস্কারের পরে সেই ফলারূপ ব্যবহার্য নয়৤ যেমন-- তর্ক=ত৒ক, বক্র=বক্‍র ইত্যাদি৤
ভুলের আশংকা হিসেবে র, ড়, ঢ়, এবং ঁ ধরা যায়৤ কারণ এগুলির বানান বা উচ্চারণ নিয়ে অনেকের মনে বেশ সংশয় থাকলেও, এগুলিকে সংশোধনযোগ্য ধরা যাবে না৤  
          সংশোধ্য বর্ণগুলি কতদিনে আত্মীকৃত হবে, তার জন্য সময় কী ধরা হবে, তার একটি ছক দেখানো হল৤ মোট সময় পর্ব ৫০ বছর৤ সামন্য কম-বেশি করা যেতে পারে, তবে খুব বেশি ব্যত্যয় না হওয়াই ভালো৤

বাংলা বর্ণ তুলনাংক চিত্র
বর্ণ
ব্যবহার
শতকরা হার %
মন্তব্য
১০৬
১.০১৮৪৪

ি
৫৯২
৫.৬৮৭৯
  (হ্রস্ব ই-কার)
নগণ্য


২০৪
১.৯৬০০
  (দীর্ঘ ঈ-কার)
৫৮
০.৫৫৭২৬৩

ু‍ু
১৮৬
১.৭৮৭০৮
(হ্রস্ব উ-কার)
নগণ্য


১৪
০.১৩৪৫
 (দীর্ঘ ঊকার)
১৭২
১.৬৫২৫৭

৪৩
০.৪১৩১৪৩৭

৫৬০
৫.৩৮০৪৭৬

৭৫
০.৭২০৫৯৯৫
য মোট ২৪৬ এর য=৭৫=০.৬৬৮৬%→০.৬৭৩,
এবং য-ফলা ১৭১=১.৫২%
৮২৪
৭.৯১৬৯৮৬
র-ফলা, রেফ সহ ১১৬৩= ১০.৩৭% 
৮৩
০.৭৯৭৪৬৩৪

২১
০.২০১৭৬৭৮

৩১৩
৩.০০৭৩০

৩২
০.৩০৭৪৫৫৮
র-এর মতো ফলা নেই
 
নগণ্য


ঁ ‍ঁ
২৩
০.২২০৯৮৩৮


মোট=৩৩০৬
৩১.৭৬৪০২৭৬৭%
মোট লিখনের  ———৩
      এক-তৃতীয়াংশ

র-এর ফলা রূপ, এবং রেফ থাকাতে তার ব্যবহার অনেক বেশি, কিন্তু মুক্তবর্ণ হিসেবে তা অতটা বেশি নয়৤
র, ড়, ঢ় নিয়ে বানানে কিছু সমস্যা হলেও এগুলির কোনওটা বাতিলযোগ্য নয়৤ এটি আঞ্চলিক উচ্চারণের সমস্যা মাত্র৤ চন্দ্রবিন্দুর ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা একই রকম৤ লেখালিখিতে প্রায়ই এসব ভুল হয়৤ তাই ভুলের আশংকার মধ্যে এগুলি ধরতে হবে৤ সংস্কারের বা বর্ণ বর্জনের তালিকায় এগুলি ঢুকবে না৤
সংস্কারের বা বর্জনের জন্য যে বর্ণগুলি বিবেচনা করতে হবে, তার তালিকা দেখা যাক৤ এর সংখ্যা তাই কিছুটা কমই হবে৤ সঙ্গে দেওয়া হল কত বছর এক-একটি সংস্কারের সময় পর্ব হবে তা--
উদ্দিষ্ট বর্ণ     
   বর্ণ চিহ্ণ
   সময় পর্ব
বর্ণতুলনাংক
মন্তব্য
ই-ঈ
ি - ী
১০
৮.৬৬৬৩৪৭

উ-ঊ
ু - ূ
২.৪৭৮৮৬২

ঋ-কার ৃ
০.১৮২৫৫১৮৮
ঋ-কার, র-ফলা 

জ-য
-     য-ফলা
২.৩৭৩১৭৪৪৮ 
য-ফলা ব্যবহার হবে না
ঞ, ণ-ন
-
১০
৫.৮২২৪৪৪
ফলা রূপ নেই
ব-ব
-
ফলা রূপ নেই
শ-ষ-স
-
১৫
৪.০০৬৫৩৩৪



মোট সময় ৫০ বছর
সর্ব মোট=২৩.৫২৯৯১

এখানে হিসেবে র ড় ঢ় চন্দ্রবিন্দু(ঁ) জনিত ভুল দেখানো হয়নি(৮.৪৪৫৪২৫৬+২৩.৩১৪৫৭৪৪=৩১.৭৬%শতাংশ)  

                    বিদ্যাসাগর বাংলা বর্ণমালা সংস্কার করার পরেও বাংলায় ঌ(=লি) বর্ণটি রক্ষিত ছিল৤ কিন্তু তা অব্যবহারের কারণে কোনও এক সময়ে আপনিই বাতিল হয়ে গেছে৤ এমনিভাবে বাতিল হবার জন্য অপেক্ষা করছে আরও বেশ কয়েকটি বর্ণ, যেগুলি বাংলায় তার নিজস্ব ধ্বনি বজায় রাখতে পারেনি৤ বাংলায় বানান সমস্যা হয় এগুলি নিয়েই৤ কারণ এগুলি মানুষ প্রায় আন্দাজেই ব্যবহার করে৤ ফলে ভুল অবশ্যম্ভাবী৤
          তাহলে এগুলি তো বাতিল করে দিলেই সমস্যা মিটে যায়৤ না, ব্যাপারটা এত সহজ নয়৤ এগুলি একবারে, একদিনে বাতিল করলে বাংলা ভাষাই আর থাকবে না৤ তেমন একটি প্রস্তাব পূর্ববঙ্গ সরকারি ভাষা কমিটি ১৯৪৯ খ্রি. দিয়েছিল৤ (১৯৪৯-- পূর্ববঙ্গ সরকারী ভাষা কমিটি সোপারেশ [সভাপতি, সৈয়দ আলী আহ্‌সান] (ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ-- সদস্য)৤ শুরু ৯ মার্চ, ১৯৪৯, এবং শেষ ৭ডিসেম্বর ১৯৫০৤ )
          বেশ, তাহলে এরা যতদিন না ঌ(লি)-এর মতো আপনিই বাতিল হয়, ততোদিন অপেক্ষা করা যাক৤
          না, সেটাও করা যাবে না, কারণ লেখাপড়ার দ্রুত প্রসার ঘটছে, মানুষের কাছে এসব বানান পৌঁছে তাদের অন্তরে গেঁথে যাচ্ছে৤ বেশি দেরি করলে তখন এই আজকে সদ্য যারা প্রথম প্রজন্মে লেখাপড়া শিখছে তারাই, পরে বাংলা বানান সংস্কার নিয়ে বেঁকে বসবে৤ এনিয়ে রবীন্দ্রনাথ চমৎকার বলেছেন--“একবার যেটা অভ্যাস হইয়া যায় সেটাতে আর নাড়া দিতে ইচ্ছা হয় না৤ কেননা স্বভাবের চেয়ে অভ্যাসের জোর বেশি৤...অভ্যাসের সঙ্গে সঙ্গে একটা অহংকারের যোগ আছে৤ যেটা বরাবর করিয়া আসিয়াছি সেটার যে অন্যথা হইতে পারে এমন কথা শুনিলে রাগ হয়৤ মতের অনৈক্যে রাগারাগি হইবার প্রধান কারণই এই অহংকার৤...”, তাই শিক্ষার এ অহংকার জন্মাবার আগেই তার বিনাশ করা দরকার৤
          তাহলে ব্যপারটা দাঁড়ালো-- (১)যেগুলি খুব বেশি ধ্বনি বিচ্যুত সেগুলি বর্জন করা দরকার, (২)তবে সবটা একবারে করলে হবে না, আর (৩)বেশি দেরি করাও যাবে না৤ বাস্তবটা বিবেচনা করতে হবে৤
          এজন্য কী করতে হবে?
অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বাছাই করে বানান সংস্কার করতে হবে৤
অগ্রাধিকার কীভাবে ঠিক করা হবে?
এর জন্য চাই বাংলা বর্ণের তুলনাংক বিচার৤ এবং তার ভিত্তিতে কোন্‌টা কখন সংস্কার করতে হবে তা নির্ধারণ করা৤
বাংলা বর্ণ ব্যবহারের তুলনাংক বিষয়ে একটি হিসেব দেখা যাবে নিচর এই লিংকে:
বাংলা বর্ণ তুলনাংক‎‎(Bangla Letter Frequency):
         
এই তুলনাংক দেখে বিচার করতে হবে কোন্‌টা আগে, আর কোন্‌টা পরে সংস্কার করা হবে? এই হিসেবের সঙ্গে একটু মনুষ্য মানস-প্রকৃতিও বিবেচনা করে নিলে সুবিধে হবে৤ ধাপে ধাপে যে সংস্কার করতে হবে তার মূল কারণটিই তো তাই৤ নইলে একবারে হোক বা ৫০ বছরে হোক, মোট ব্যাপার তো সেই একই দাঁড়াবে, শুধু সময়ের ফারাক!
এই সংস্কার করণের মাঝে ফাঁক দিতে হবে কয়েক বছর করে, যাতে এই সংস্কার মানুষের আত্মস্থ হবার পরে পরবর্তী সংস্কারে হাত দেওয়া হয়৤ আজ একটা করলাম, পরের বছর আর একটা করলাম, এমন নয়, মাঝখানে বেশ বড় সময়ের ফাঁক দিতে হবে৤ ১৯৩৭-এ কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বানান সংস্কার করে (১৯৩৬-৩৭-- বাংলা বানানের নিয়ম, কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় [১ম-- ৮মে, ১৯৩৬,  ২য়-- ২অক্টোবর, ১৯৩৬, ৩য়-- ২০মে, ১৯৩৭]৤ সে প্রায় ৮০ বছর হল, কিন্তু সংস্কারের সত্যি কাজ কিছুমাত্র এগোয়নি৤ কেবল বাংলা বানানের গায়ে কিছু প্রলেপ দেওয়া হয়েছে, সংস্কার হয়নি৤ সেই ভুল, সেই সমস্যা এখনও ঠিক তেমনিই আছে, ততোটাই আছে৤ আছে, কারণ তাঁরা বাংলা বর্ণমালার মূল সমস্যা নিয়ে না ভেবে, তার গায়ে নানা প্রলেপ দেবার কাজ করেছেন৤ এভাবে নয়, সংস্কার এমন হবে যে, তা নিয়ে আর কোনও সমস্যা হবে না, সমস্যা থাকবে না৤
(১)প্রথম সংস্কার হবে ই-ঈ/ি - ী , এই স্বরবর্ণ এবং স্বরচিহ্ন দুটি৤ কারণ এদের ব্যবহার খুব বেশি, এবং মোট বানান ভুলের এক-চতুর্থাংশই(১/৪) এরা তৈরি করছে৤ বাংলায় বানান ভুল হয় কত? সাধারণভাবে তা ৩১.৭৬% শতাংশ৤ আর ই-ঈ, ি - ী এর সম্মিলিত ব্যবহার প্রায় ৮.০৪৩৯% শতাংশ(৮.০৪৩৯×৪=৩২.১৭৫৬)৤
ভুল নিবারণের জন্য হিসেব কষে দেখা গেছে যে, বাংলায় মোট বানান ভুলের আশংকা প্রায় ৩১.৭৬% শতাংশ, আর তার ৮.০৪৩৯% শতাংশই তৈরি হচ্ছে ই-ঈ/ি - ী এর সম্মিলিত কোলাহলে৤ বাংলায় ই-ঈ এবং ি- ী ব্যবহারের তুলনাংক হল--
ই=০.৯৪৪৯% শতাংশ
ঈ=ব্যবহার খুবই কম/নগণ্য৤
ি=৫.২৮%শতাংশ
ী=১.৮১৯ শতাংশ
          এর সকলগুলির ব্যবহার একত্রে মিলিয়ে=৮.০৪৩৯%শতাংশ৤ শুধু স্বরচিহ্ন দুটি মিলিয়েই ৭.০৯৯%শতাংশ৤ এখানে স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে যে, স্বরধ্বনি দুটির ব্যবহার খুবই বেশি, আর ই-কার (ি) সবাইকে ছাপিয়ে অনেক উপরে৤ তাই যদি ি- ী মিলিয়ে একটি চিহ্ন হয়, তবে বাংলায় মোট বানান ভুলের এক-চতুর্থাংশই কমে যাবে, কারণ বাংলায় বানান ভুলের মোট আশঙ্কা প্রায় ৩১.৭৬% শতাংশ৤ তাই যদি ি - ী মিলিয়ে একটি চিহ্ন করা হয়-- তবে বাংলায় মোট বানান ভুলের এক-চতুর্থাংশই কমে দাঁড়াবে ২৩.৭১৬১%৤
          এজন্য বাংলায় ই/ঈ-এর মধ্যে থাকবে, ‘ই’, এবং ব্যবহারিক সুবিধার কথা বিবেচনা করে ই-এর চিহ্ন হবে-- ী৤ এটি তখন আর দীর্ঘ-ঈকার নয়, হ্রস্ব ই-কার৤ কম্পিউটারে ইউনিকোড ফন্টে(হরফসমূহ) লেখার কালে সকল স্বরচিহ্নই সাথী বর্ণের পরে টাইপ করতে হয়, ক+ি=কি, আর ক+ী=কী৤ তাই ী চিহ্নই সুবিধাজনক৤ সেজন্য সে চিহ্নই ই-এর স্বরচিহ্ন হিসেবে গ্রহণ করা হল৤ চিহ্নটি তো এখন মুক্ত৤ ছোট্ট অণু সংস্কার-প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংস্কার কাজ শুরু হবে৤ আত্মীকরণের সময় হবে ১০ বছর৤
          (২)দ্বিতীয় সংস্কার হবে ঞ, ণ-ন নিয়ে৤ যদি লেখা হয় চিহ্ন, এবং প্রাহ্ণ তবে এর কোন্‌টা কোন ন, তা হদিশ করা কঠিন৤ আর এই বানান নিয়ে বাংলায় মোট ভুলের সম্ভাব্যতা/আশংকা হল-- ণ=০.৩৮৩৩ ,ন=৪.৯৯২ , মোট=৫.৩৭৫৩ শতাংশ৤
বাংলায় ঞ ব্যবহার ০.০২৬৭৫ শতাংশ, এর বদলে প্রয়োজনে ‘ন’ ব্যবহার করা হবে৤ যেমন-- বঞ্চনা=বন্চনা হবে৤ রঞ্জন=রন্জন৤ আত্মীকরণের সময় হবে ১০ বছর৤
          (৩)এর পরে উ/ঊ স্বরবর্ণ, ু - ূ স্বরচিহ্ন৤এদুটির মোট ব্যবহার--উ=০.৫১৭১, ঊ=নগণ্য, ু=১.৬৫৮,  
ূ-০.১২৪৮ শতাংশ৤ এগুলির মোট ব্যবহার = ২.২৯৯৯শতাংশ৤ আত্মীকরণের সময় হবে ৫ বছর৤
          (৪)জ/য ব্যবহার৤ জ=১.৫৭০, য=০.৬৬৮৬, য-ফলা=১.৫২ , মোট=৩.৭৫৮৬ শতাংশ৤ শুধু জ থাকবে৤ যাযাবর= জাজাবর, যানবাহন=জানবাহন, আর যেখানে য-ফলা হবে সেখানে তা লেখা হবে-- রাজ্য=রাজ্জ, ভোজ্য=ভোজ্জ, বাহ্য=বাহ্ঝ ইত্যাদি করে৤ আত্মীকরণের সময় হবে ৫ বছর৤
          (৫)ষ=০.৩৭৪৪ বর্জিত হবে৤ শ এবং স থাকবে৤ বাংলায় মূলত ‘শ’ ব্যবহার প্রায় সর্বত্র, আর যুক্তবর্ণে স-ধ্বনি একচ্ছত্র৤ সুশ্রী=শুস্রি, বিশ্রী=বিস্রি, পরিশ্রম=পরিস্রম৤ অভিধানে স-দিয়ে শুরু শব্দের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি৤ আত্মীকরণের সময় হবে ১৫ বছর বা অনির্দিষ্টকাল, কারণ এর পরে আর অন্য কোনও সংস্কারের প্রস্তাব আপাতত নেই৤
          (৬)অন্তস্থ-ব তো আগেই বাতিল করা হয়েছে, এবং ঌ(লি) আপনিই বাতিল হয়ে গেছে৤
এগুলি একত্রে মিলে ভুলের বেশির ভাগই সংশ্লিষ্ট বর্ণের সংস্কারের সময়েই বিলুপ্ত হবে, এবং প্রকৃতপক্ষে এত পরিমাণ ভুলও থাকবে না৤ নানা পর্যায়ে তা পারিপার্শ্বিক সংশোধ্য ভুলকে সামনে টেনে আনবে এবং আপনিই তাকে শোধন করবে৤
ধরি হিসেবের বর্ণ কড়ি হল ১০৪০৮, এর মধ্যে নানাভাবে বর্ণ ভুলের শংকা ৩৩০৬৤ তাহলে তার শতকরা হিসেব দাঁড়াল ৩১.৭৬৪০২৭%শতাংশ৤ এর স্বরবর্ণ ঘটিত ভুল ৫.২০৭৫, ব্যঞ্জনবর্ণ ঘটিত ভুল ৫৪.৩১৪, স্বরচিহ্ন জনিত ভুল ৩২.২৫৪, এবং ফলা তথা ব্যঞ্জনবর্ণ-চিহ্ন জনিত ভুল হবে ৮.২২৪ শতাংশ৤ একুনে ৩১.৭৬% শতাংশ, অর্থাৎ ব্যঞ্জনবর্ণ এবং স্বরচিহ্ণ ঘটিত ভুলই প্রধান(৮৬.৫৬৮)৤
          যদি লিখি ‘অংক’ তবে ‘অঙ্ক’ বানান থেকে পার্থক্য ঘটবে, ‘সংবাদ’ লিখতে ‘সঙবাদ’ লেখা হবে না৤ ‘বাংলা’ কিন্তু ‘বাঙালি’, স্বরান্ত হলে ঙ হবে অন্যত্র অনুস্বর/অনুস্বার৤ কোলকাতা, দরকার লেখা হবে, কিন্তু চলবে না কোল্কাতা, দর্কার ইত্যাদি লেখা৤
          এমনি শত ভাঁজ খাঁজ রয়েছে বানানে তাই একবারে তা সবটা নির্মূল করা যাবে না৤ সে চেষ্টা না করে ধাপে ধাপে করলে সমস্যার প্রকৃতি বোঝা সহজ হবে এবং তদনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যাবে৤ আবার ড্রইং এবং ড্রয়িং দুরকমই লেখা হয়৤ ই-এর ব্যবহার এরকমও হয়-- তখনই/তখনি৤
          একটা ব্যাপারে যদিও ভুল নেই তবে নানা রকম করে লেখা যায়-- ড৹/ড○/ ড./ডঃ  
যাব/যাবো লেখার কোন্‌টা যে লেখা হবে তা নিয়ে সমস্যা কম নয়, ‘কমল’ লিখলে উচ্চারণ পার্থক্যে দুরকম অর্থ হতে পারে, যেমন-- কমল=পদ্ম, কমল=কমিল৤ ম ধ্বনি অ-কারান্ত হলে তা হবে পদ্ম-- কম৹ল৤ আবার ম ধ্বনি হলন্ত হয়ে, ল ধ্বনি অ-কারান্ত হলে হবে-- কম্‌ল৹/কমল৹ = কমিল৤
          চাঁদ লেখা ঠিক আছে, কিন্তু পুঁথি বানান এখন আর নেই লিখতে হবে ‘পুথি’ চন্দ্রবিন্দু বাদ৤ এমনি ভাবে নানা সময়ে নানা বানানে যে পরিবর্তন হয়েছে, তা মনে রাখাতেই সমস্যা, বাংলায় একটা সর্বমান্য অভিধান অবধি নেই৤ বিশ্বে বাঙালি ত্রিশ কোটি, কিন্তু বিশ্বে দুজন বাঙালি নেই যাঁরা বাংলা সকল শব্দের বানান নিয়ে একমত৤ অথচ পণ্ডিতেরা ছড়ি ঘুরিয়ে চলেছেন৤
          তবে একটা কথা মনে রাখা দরকার যে, যাব/যাবো, খাব/খাবো ইত্যাদি ধরনের ভুল অন্য পর্যায়ে পড়ে৤ সে ভুল তৎকালীন পরিস্থিতি বিবেচনা করে সূত্রায়িত করে সংশোধন করতে হবে৤ বাংলায় অনেক সময়ে ‘অ’ সাধারণভাবে ‘ও’ ধ্বনিতে, এবং ‘য়’ ধ্বনি ‘ও’ ধ্বনিতে পরিণত হয়-- অমিয়=ওমিয়, অমিয়=ওমিও৤
          অবশ্য আরও কিছু সংস্কার করতে হবে, যেমন-- ঋ স্বরবর্ণটি৤ এটির বিকল্প হবে র-ফলা এবং হ্রস্ব-ইকার একত্রে মিলিত হয়ে৤ যেমন-- ঋণ=৒রীন, কৃমি=ক্রিমি, পরবর্তী পর্যায়ে ক্‍রীমী, কৃষি=ক্রিশি=ক্‍রীশী, ক্রিকেট/কৃকেট=ক্‍রীক৙ট ইত্যাদি৤ ভাষাপণ্ডিতেরা বলেন বাংলাভাষার জন্মের আগেই স্বর হিসেবে ঋ-ধ্বনি লুপ্ত হয়েছে৤ অথচ আমরা তার লিপিরূপ স্বরধ্বনির বর্ণ হিসেবে ব্যবহার করে চলেছি!

স্বরচিহ্নগুলি অন্যভাবে ব্যবহৃত হবে--
বাংলায় মোট মৌলিক স্বরবর্ণ --৭টি৤ প্রচলিত ৬টি এবং নতুন ১টি, এই মোট ৭টি৤
স্বরবর্ণ(৭টি)
 
 
 
 
 
 এা
 
স্বরবর্ণ চিহ্ন
 
 
 
 
 ৙
 ৙঄
 
স্বরবর্ণ চিহ্ন প্রয়োগ
 
 কা
 কী
 কু
 ক৙
 ক৙঄
 ক৚
প্রচলিত
 
 কা
 কি
 কু
 কে
 ক্যা
 কো
প্রচলিত ব্যবস্থায় অ-বর্ণের কোনও বাহ্যিক স্বরচিহ্ন নেই৤ নতুন ব্যবস্থায় এটি নতুন প্রয়োগ৤ এটি হবে
অ-কার = ৹ , যেমন--ক৹, খ৹, গ৹ ইত্যাদি৤ বর্তমান চালু অবস্থাতে যেমন অ-এর বাহ্যিক চিহ্ন নেই, নতুন ব্যবস্থায়ও তেমনি হবে৤ এটি বিশেষ প্রয়োজনে ব্যবহার্য, অপ্রয়োজনে এই চিহ্ন ব্যবহার করা হবে না৤
বাংলায় র ড় ঢ় এবং চন্দ্রবিন্দু(ঁ) নিয়েও কিছু সমস্যা আছে ঠিকই, তবে সেটা উচ্চারণের আঞ্চলিক সমস্যা, তা মুখ্য ব্যাপার নয়৤
          এসব সংস্কারের পরে বাংলা বানানে ভুল প্রায় থাকবে না৤ তব একেবারে যে থাকবে না, তা বলা যাবে না৤ বাংলা একটি সজীব ভাষা, তার চলন উচ্ছ্বল নদীর মতো-- একূল ভাঙে ওকূল গড়ে, পলি পড়ে, দ্বীপ সৃষ্টি হয়, সুতরাং ভুলও তৈরি হবে নানা উপায়ে৤ সে ভুল কিন্তু তেমন কোনও লক্ষণীয় ব্যাপার হবে না৤ সেটা তখনকার পরিস্থতিতে বিচার করে সমাধান করতে হবে৤ এই সকল পরিস্থিতি বিচার ও নিয়ন্ত্রণের জন্য চাই বাংলাভাষার একটি আন্তর্জাতিক সংসদ৤ যাঁরা বাংলা ভাষা ও বানানের আগা-পাশ-তলা সব দেখবেন৤  
          এসব সংস্কার করতে অন্তত ৫০ বছর সময় দিতে হবে, প্রথম সংস্কার তথা ই/ঈ, ি - ী সংস্কারটির পরে দশ বছর আর অন্য কোনও সংস্কার করা হবে না৤ মানুষ ধাতস্থ হলে, দশ বছর পরে পরের সংস্কারে হাত দিতে হবে৤ ততোদিনে মানুষ এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে একাত্ম হয়ে উঠবেন, কারণ বানান নিয়ে সমস্যা তো ততোদিনে অনেকখানি কমে যাবে৤ কে আর সেধে গলা বাড়িয়ে দিতে চায় ভুলের গিলোটিনের তলায়৻
          আমাদের বানান ভুলের স্বেচ্ছাবিলাস এবার বন্ধ হোক৤ এতে যে নইলে অনেক মূল্য চোকাতে হচ্ছে!
ড্রপ-আউট, এবং তজ্জনিত আর্থিক পশ্চাৎপদতা ঘটছে, সেটা মনে রাখতে হবে৤ বানান ভুল জাতিকেই পিছিয়ে রাখছে৤ একজন বিজ্ঞানী তার গবেষণার কাজ লিখতে গিয়ে কি হ্রস্ব-ই, দীর্ঘ-ঈ নিয়ে মাথা ঘামাবেন, নাকি তার উপাত্ত নিয়ে চিন্তা করবেন৤ বানানে এই যে নানা রঙের প্রলেপ এতে আর যাই হোক সমস্যা কমছে না৤ ১৯৩৭-এ কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় যে বানান সংস্কার করেছিলেন তা বাংলা বানানের কিছুমাত্র উপকার করতে পারেনি৤ কেবল ব্যাপারটা গুলিয়ে গেছে৤ সংস্কৃত শব্দের বানান সংস্কৃত করেই লিখতে হবে এই নিদানই সমস্যার মূল উৎস৤ অরুণ সেন বলেছেন--“যে-শব্দকে কোনো অভিধানে তৎসম বলা হয়েছে, সেই শব্দকেই হয়তো অন্য অভিধানে তদ্ভব বা এমনকী কখনো বিদেশী বলে গণ্য করা হয়েছে৤” (বাংলা বানান ও বিকল্প বর্জন একটি প্রস্তাব--অরুণ সেন৤ প্রতিক্ষণ, ডিসেম্বর, ১৯৯৩, পৃ-৫২)৤ তিনি আরও বলেছেন-- বাংলা ভাষায় লেখালেখি, পড়া ও পড়ানো, বই বা পত্রপত্রিকার সম্পাদনা ও প্রকাশনা কিংবা প্রুফ-দেখার কাজ, ইত্যাদিতে যাদের জীবনের একটা বড় সময় কেটেছে, তাদের বহু মর্মান্তিক অভিজ্ঞতার মধ্যে একটি অন্তত এই: বাংলা বানান নিয়ে যথেচ্ছাচার কত রকমের এবং কত গভীর হতে পারে তা চাক্ষুষ করা৤ ... অনেকেই মনে করে, "বাংলা বানান তো সব রকমই হয়৤"(পৃঃ-১৭)৤ কাদায় পড়লে হাতি চামচিকেতে মারে লাথি৤
          এই দুঃখের বিলাসকে এবার কঠোর হাতে দমন করা হবে৤ ছিচকাঁদুনে বাঙালি এবার তার চরিত্রে দৃঢ় হোক৤ তার বস্তুসম্পদ, তার মানস-সম্পদ তো অন্যে দখল করতে বার বার হানা দিয়েছে৤ এবার সেটা বন্ধ করার প্রথম অভিযান হল, বাংলা বানানে নির্ভুল হওয়া৤ অন্যে কী বলল সেটা নয়, আমার কী চাই, সেটাই হবে পথ চলার পাথেয়৤
          আমরা চাই সকল প্রকার লেজুড়বৃত্তি ছেড়ে বাংলা বানান ‘বাংলা’ হোক৤ এককালে গভীর চক্রান্ত করে বাংলাকে ব্রাত্য বলা হত, এবং ব্রাত্য করে রাখা হয়েছিল, আজও তাকে ব্রাত্য করার প্রয়াস সগর্বে প্রতিরোধ করতে হবে৤ বাংলায় আছে বৈষ্ণব পদাবলী, আছে রবীন্দ্রনাথের গান ও বিশ্বশ্লাঘ্য নোবেল পুরস্কার৤ বাংলা কারও কাণা কড়ি ধারে না, নিজের আছে অঢেল সম্পদ৤ তা বিলিয়েই কূল পাওয়া যাবে না৤ বিশ্বের মধুরতম ভাষা বাংলা আপন মনের মাধুরী বিলায়ে সবারে করিছে আদর আমন্ত্রণ৤ এসো সাধুজন করহ গ্রহণ সুধাভরা অক্ষয় এ অমৃতপ্রাণ৤

এসব নানা দিক নিয়ে আলোচনা নিচের লিংকগুলিতে আরও বিস্তারিত দেখা যাবে:--
(চারটি অংশ)বাংলাভাষা সংস্কার Bangla Bhasha Sanskar  প্রথম অংশ: http://banglainternational.blogspot.in/2014/04/bangla-bhasha-sanskar.html

 

(মোট চারটি অংশ)বাংলা নতুন-বানান Bangla Natun-Banan -প্রথম অংশ :

http://banglamagna.blogspot.in/2013/02/bangla-natun-banan.html




 

                   অমেয় বাংলা                             অমিয় ভাষা  


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন